গলদা চিংড়ি চাষের জন্য পানি সঞ্চালন ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গলদা খামারের পানি সঞ্চালন ব্যবস্থা পানি সরবরাহ, পানি শোধন, পানি সরবরাহ খাল ও পানি নিষ্কাশন খাল সমন্বয়ে গঠিত। সাফল্যজনকভাবে চিংড়ি উৎপাদনের জন্য খামারে পরিকল্পিত ও উন্নতমানের পানি সঞ্চালন ব্যবস্থা থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। পুকুরে পরিকল্পিত ও নিয়মিত পানি সঞ্চালনের মাধ্যমে চিংড়ি উৎপাদনের হার বৃদ্ধি করা যায়।
গলদা চিংড়ি চাষের জন্য তিনটি উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা যায়। উৎস তিনটি হচ্ছে-
(ক) বৃষ্টির পানি,
(খ) নদী বা খালের থিতানো দূষণমুক্ত পানি ও
(গ) ভূগর্ভস্থ ভারী ধাতুমুক্ত পানি।
গলদা খামারে বর্ষাকালে সাধারণত বৃষ্টির পানি সরবরাহ করা হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে অন্য কোনো উৎস থেকে খামারে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা ভালো। চিংড়ি চাষ পদ্ধতি এবং পুকুরে চিংড়ির মজুদ সংখ্যার ওপর নির্ভর করে পুকুরে পানি সরবরাহের পরিমাণ। যে সমস্ত পুকুরে বাইরে থেকে খাদ্য সরবরাহ করা হয় সে সমস্ত পুকুরে নিয়মিত পানি পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী।
খাল বা নদীর পানি পুকুরে সরবরাহের পূর্বে থিতিয়ে নেয়া ভালো, কারণ এ পানিতে দ্রবীভূত ভাসমান জৈব ও অজৈব পদার্থ থাকে যা চিংড়ি চাষের জন্য উপযুক্ত নয়। তাছাড়া এই পানিতে অবাঞ্ছিত প্রাণী, প্রাণির ডিম, লার্ভা ইত্যাদি থাকে যা পানির সাথে পুকুরে প্রবেশ করে চিংড়ির উৎপাদন কমিয়ে দেয়। তাই এই পানি পুকুরে সরবরাহের পূর্বে সরবরাহ খাল বা জলাধারে তা থিতিয়ে ফিল্টার বা ২৫০ মাইক্রন নেটের মাধ্যমে ছেকে পুকুরে সরবরাহ করা উচিত। এর ফলে অবাঞ্ছিত প্রাণির প্রবেশ রোধ করা যায়। ভূগর্ভস্থ পানিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ভারী ধাতু মিশ্রিত থাকে। পানির ভারী ধাতু চিংড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর। এই জন্য ভূগর্ভস্থ পানি পুকুরে সরবরাহের পূর্বে তা সরবরাহ খাল বা জলাধারে পর্যাপ্ত বায়বীয় (Aeration) করে নেওয়া উচিত।
আরও দেখুন...